nutrition-basics

Nutrition এবং Nutrients এর বেসিক

‘আমরা যেসব খাওয়ার প্রতিদিন খাই, আমাদের স্বাস্থ্য এবং জীবন যাপনের উপর তার প্রভাব দেখা যায়’ । কথাটা পরিষ্কার হল না । তাই তো? খাওয়ারের সঙ্গে স্বাস্থ্যর সম্পর্ক বোঝা যায়, কিন্তু জীবন যাপনের সঙ্গে সম্পর্ক কি? ভালো খাওয়ারের সঙ্গে ভালো জীবনযাপনের মধ্যে একটা সহজ সরল সম্পর্ক আছে । সেটা বোঝার আগে একটু জেনে নিই, Nutrition কি? আমরা যেসব খাওয়ার খাই, তাতে দু ধরনের nutrients থাকে, যা আমাদের দেহের বিভিন্ন বিকাশে সাহায্য করে । একেই আমরা সংক্ষেপে nutrition বলতে পারি ।

Nutrition এর অন্তর্গত প্রক্রিয়াগুলো খুবই সাধারন, যা আমরা কম বেশী সবাই জানি । যেমন, খাদ্যগ্রহন, পরিপাক বা হজম, শোষন, আত্তীকরন এবং রেচন বা বর্জন। এইসব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমাদের গ্রহন করা খাদ্যের বিভিন্ন গুণাবলী বা nutrients মানবদেহের বৃদ্ধি, সুস্থ থাকা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তোলা এবং কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তির জোগান এইধরনের কাজগুলি করে । একজন মানুষের nutrition সম্পূর্ন হয় উপযুক্ত পরিমানে খাওয়ার এবং জলপানের মাধ্যমে ।  

Nutrition এর ব্যাপারে বোঝার জন্য আমাদের আগে জানতে হবে nutrients  এর ব্যাপারে । তাহলে চলুন জেনে নিই আমরা যেসব খাওয়ার খাই তাতে কি কি nutrients  থাকে ।

খাদ্যের মূল গুনাবলী (Nutrition and Nutrients)

আমরা যেসব খাওয়ার খাই, তাতে দুই প্রকারের nutrients থাকে – Macronutrients এবং Micronutrients

Macronutrients

কার্বহাইড্রেট বা শর্করা, প্রোটিন এবং ফ্যাট – এগুলি খাদ্যের macronutrients হিসেবে পরিচিত । কারন আমাদের শরীরের বৃদ্ধির জন্য বা যেকোন ধরনের কাজ করার জন্য যে শক্তি বা energy র প্রয়োজন তা যোগান দেওয়ার জন্য অনেকটা পরিমান প্রোটিন, ফ্যাট বা শর্করা জাতীয় nutrients  এর প্রয়োজন হয় । এবং এদের প্রত্যেকের নিজস্ব ভূমিকা আছে আমাদের দেহগঠন বা শক্তিপ্রদানের ক্ষেত্রে ।

প্রোটিন (Protein) –

এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট যা প্রচুর পরিমানে প্রাণীজ পদার্থ যেমন ডিম দুধ এতে পাওয়া যায় । এছাড়াও কিছু উদ্ভিদজাত উৎস আছে যা মানবদেহে প্রোটিন যোগান দেয় । মাংসপেশী গঠন, স্বাভাবিক বৃদ্ধি, ক্ষয়পূরন এরকম বিভিন্ন শারীরিক গঠনমূলক কাজ অ্যামিনো অ্যাসিড করে যা আমরা সাধারনত প্রোটিনের মাধ্যমে পাই । প্রোটিনের সহজলভ্য উৎসগুলি হল –     

nuts-protein-source
Source of protein – Groundnuts

প্রাণীজ উৎস যেমন পোল্ট্রি, ডিম, মাংস, মাছ ।  

দুধ এবং দুগ্ধজাত পদার্থ যেমন দই, মাখন, চিজ ইত্যাদি ।

উদ্ভিদজাত উৎস যেমন সোয়াবিন, টোফু, চিনাবাদাম, অন্যান্য বাদাম, বিভিন্ন seeds বা দানা, শাকসবজি ইত্যাদি ।

ফ্যাট (Fat) –

ফ্যাট বা চর্বি মানবদেহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে । ফ্যাট জাতীয় খাওয়ার থেকে আমরা প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড পাই ।  মানবদেহের কোষের বাইরের আবরন গঠন করে কোষগুলিকে বাইরের আঘাত থেকে রক্ষা করে । প্রতিদিনের কাজকর্মের জন্য আমাদের যতটা পরিমান শক্তির প্রয়োজন তার খানিকটা আমরা পাই ফ্যাট বা চর্বি জাতীয় খাওয়ার থেকে । ফ্যাট জাতীয় খাদ্যের উৎসগুলি হল –

প্রাণীজ উৎস যেমন মাছ, মাংস ।

দুধ এবং দুগ্ধজাত পদার্থ যেমন মাখন, ঘি, ইত্যাদি ।

উদ্ভিতজাত  উৎস যেমন আলমন্ড, বাদাম ইত্যাদি ।

কার্বহাইড্রেট বা শর্করা (Carbohydrate) –

কার্বহাইড্রেট বা শর্করা জাতীয় খাদ্যের প্রধান কাজ হল আমাদের শরীরে শক্তির যোগান দেওয়া এবং শরীরকে কর্মক্ষম করে তোলা । মানবদেহের শক্তি বা energy  র প্রয়োজন সর্বদাই হয় । এমনকি আমরা যখন ঘুমাই তখনও শক্তির প্রয়োজন হয় শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন, শ্বাসকার্য করা এই ধরনের কাজের জন্য । শর্করা জাতীয় খাওয়ার সাধারনত পাওয়া যায় উদ্ভিদজাত উৎস থেকে । শর্করা জাতীয় খাদ্যের উৎসগুলি হল –

bread-carbohydrate-source
Source of Carbohydrate – Bread

শষ্যদানা যেমন গম, ব্রাউন রাইস, ভুট্টা, আটা, রাগি, জোয়ার ।

সবজি যেমন আলু, মিস্টি আলু,

চর্বি জাতীয় পদার্থ যেমন ঘি, মাখন, ডালডা, রান্নার তেল ।

এছাড়াও পাউরুটি, বিস্কুট, পাস্তা, চিনি, গুড় ইত্যাদি ।

Micronutrients

Macronutrients এর পাশাপাশি খাদ্যে আরও কিছু উপাদান থাকে যা আমাদের শরীরের সার্বিক গঠন এবং উন্নয়নে সহায়তা করে । ভিটামিন এবং মিনারেলস বা খনিজ উপাদান হল দুই ধরনের micronutrients যা সাধারনত খাদ্যে পাওয়া যায় ।

ভিটামিন (Vitamins)

আমাদের শরীরের সমস্ত রকম কার্যকলাপে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন যেমন A, B, C, D, E এবং K গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে । আমাদের শরীরে কোন রকম ভিটামিন উৎপাদন হয় না, তাই নানা রকম খাওয়ারের মাধ্যমে আমরা ভিটামিন গ্রহন করি ।

fruits-vitamin-source
Fruits are good source of vitamins

মিনারেলস (Minerals)

Minerals  বা খনিজ পদার্থ যেমন সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, কপার ইত্যাদির আমাদের শরীরের জন্য গুরুত্ব পূর্ণ ভুমিকা পালন করে । আমরা সাধারনত যেসব খাওয়ার খাই তার মধ্যে থেকেই এইসকল খনিজ উপাদান আমরা পেয়ে থাকি ।

খাওয়ারের থেকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন বা খনিজ উপাদান যথাযথ পরিমানে পেতে গেলে সবরকমের শাকসবজি, ফল, দুধ, দুগ্ধজাত পদার্থ, মাছ, মাংস, পোল্ট্রি, দানাশষ্য, বাদাম এবং অন্যান্য পুষ্টিকর খাওয়ার খেতে হবে, যা আমাদের micronutrients  এর পাশাপাশি macronutrients পেতেও সাহায্য করবে ।

জল

আমাদের খাদ্য তালিকার একটি গুরুত্বপূর্ন উপাদান হল ‘জল’ । আমরা সবাই জানি জলের অপর নাম জীবন । অর্থাৎ জলের অভাবে মানুষের মৃত্যু অনিবার্য । জল আমাদের শরীরে বিভিন্ন জটিল কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রন করে, যেমন খাওয়ার হজম করা, রেচন পদ্ধতি, শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রন ইত্যাদি । তাই যথাযথ পরিমানে খাদ্য গ্রহনের সঙ্গে উপযুক্ত পরিমানে জল পান করাও বাধ্যতামূলক ।

সারমর্ম

স্বাস্থ্যকর এবং সুষম খাদ্য গ্রহন আমাদের শরীরের জন্য এবং প্রতিদিনের কাজকর্মের জন্য একান্ত প্রয়োজন । ফল, শাকসবজি, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ঘি, মাখন, পনির, বাদাম, নানারকম দানাশষ্য এইধরনের খাওয়ার আমাদের খাওয়ারের তালিকা অন্তর্ভুক্ত করতে হবে যা আমাদের সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপনে সাহায্য করবে ।

আশা করি লেখাটি পড়ে আপনাদের কাছে nutrition সম্পর্কে কিছুটা ধারনা পরিষ্কার হয়েছে এবং আমরা যে খাওয়ার প্রতিদিন খাই তা আমাদের কাছে কতটা উপযোগী সে সম্পর্কেও কিছটা ধারনা দিতে পেরেছি । Nutrition সম্বন্ধে যত জানবেন, নিজেদের খাওয়ারের মান ও তত উন্নত হবে । তাই nutrition এর ব্যাপারে বা এই সম্বন্ধিত অন্য কোন ব্যাপারে জানার থাকলে নীচে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন অথবা আমাদের ই-মেইল করতে পারেন । অবশ্যই আপনাদের মতামত জানাতে ভুলবেন না । ভালো খান, সুস্থ থাকুন ।

How useful was this post?

Click on a star to rate it!

We are sorry that this post was not useful for you!

Let us improve this post!

Tell us how we can improve this post?

Leave a Reply

Scroll to Top